আপনি কি ব্লগ থেকে আয়ের কথা ভাবছেন? তবে জেনে খুশী হবেন যে এই নিবন্ধে আমি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট
উপস্থাপন করবো যার মাধ্যমে আপনি ব্লগিং করে ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের
উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন ।
অবশ্যই আপনি কি পরিমান আয় করবেন তা নির্ভর করছে আপনার অভিজ্ঞতা, ব্লগের ধরন, আপনার পরিকল্পনা ইত্যাদির উপর। “কেন ব্লগারদের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা জরুরী ?” নামক নিবন্ধটি আপনি পরেছেন কি ? যদি পূর্বে না পরে থাকেন তবে এখনি পরতে পারেন ।
প্রতিনিয়ত আয়ের নতুন নতুন অসংখ্য পদ্ধতির সৃষ্টি হচ্ছে তাই আপনাকে বিষয়গুলো
ভালভাবে জানতে হবে, জানতে হবে কোন পদ্ধতি আপনার ব্লগের আয়ের পরিমানকে
বৃদ্ধি করছে, কোন পদ্ধতি আপনার ব্লগের জন্য উপযোগী বা কোনটি সঠিক নয়
ইত্যাদি ।
আমি আজকে আপনার সামনে বেশ কিছু পদ্ধতি উপস্থাপন করবো আপনি চাইলে আপনার
ব্লগের জন্য তা পরিক্ষামুলকভাবে প্রয়োগ করে দেখতে পারেন কিধরনের ফলাফল
পাওয়া যায়
বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানে একাউন্ট তৈরি করুনঃ
ব্লগে বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে আয় করা বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি পদ্ধতিতে পরিনত হয়েছে। তবে আপনাকে একটি বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে তা হচ্ছে ব্লগে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন থেকে আপনি যদি আয় করতে চান তবে আপনার ব্লগের অবশ্যই পাঠক প্রিয়তা থাকতে হবে।
সরাসরি বিজ্ঞাপন বিক্রয় করুনঃ
সরাসরি বিজ্ঞাপন বিক্রয় করা একটি খুবই কার্যকরী এবং সহজ পদ্ধতি । আপনি
যদি আপনার ব্লগের নির্দিষ্ট কিছু অংশে বিজ্ঞাপনের মূল্য প্রদান করেন তবে
বিজ্ঞাপনদাতারা আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রদানের জন্য উৎসাহী হবে এবং তারা
এজন্য সরাসরি আপনাকে অর্থ প্রদান করবে । সরাসরি বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে
অর্থ গ্রহন করার জন্য আপনার অবশ্যই পেপাল একাউন্ট থাকতে হবে ।
সরাসরি বিজ্ঞাপন বিক্রয় করার সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হচ্ছে আপনাকে এর জন্য কোন তৃতীয় পক্ষকে কমিশন প্রদান করতে হবেনা । গুগল এডসেন্স তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিজ্ঞাপনের ৩৭ ভাগ কমিশন নেয় অর্থাৎ আপনার আয়ের ৩৭ ভাগ অর্থ গুগল কেটে নেয় ।
সিপিএম বিজ্ঞাপন থেকে আয় করতে পারেনঃ
আপনার ব্লগে যদি প্রচুর ভিজিটর থাকে এবং আপনার প্রচুর ভিজিটর থেকে আপনি যদি বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করে আয় না করতে পারেন তবে সিপিএম বিজ্ঞাপন আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । সিপিএম বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে আপনি প্রতিহাজার ভিজিটরের জন্য ৩ থেকে ৮ ডলার আয় করতে পারবেন । ধরুন আপনার ব্লগে যদি দৈনিক গড়ে ১০ হাজার ভিজিটর আসে তবে আপনি দৈনিক ৫০ ডলার আয় করতে পারেন ।
বিশ্বে অনেক সিপিএম বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আগামীতে জনপ্রিয় সিপিএম নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আলোচনা করবো ।
পন্যের রিভিউ করে আয়ঃ
পন্য রিভিউ করে আয় করা খুবই সহজ একটি পদ্ধতি । আপনার ব্লগটি যদি বিজ্ঞাপন্দাতাদের পছন্দ হয় তবে তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করবে এবং আপনি পন্য রিভিউ এর জন্য কত টাকা নিতে চান সেসম্পর্কে তারা বিস্তারিত জানতে চাইবে । আপনি প্রয়োজনে আপনার ব্লগের বিজ্ঞাপন নামে একটি পাতা তৈরি করতে পারেন সেখানে পন্য রিভিউ এর জন্য কি পরিমান অর্থ নিতে চান তা তালিকাভুক্ত করুন ।
এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয়ঃ
আপনি ব্লগের জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং পদ্ধতির প্রয়োগ করতে পারেন । এফিলিয়েট
মার্কেটিং সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে নিম্নের লিংকগুলো ব্যাবহার করতে
পারেন । মনে রাখবেন এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরুর পূর্বে আপনাকে মার্কেট
এনালাইসিস করতে হবে । ধরুন আপনি বাংলাদেশের অথবা ইন্ডিয়া, পাকিস্তান এর
পাঠক বেশি পাচ্ছেন তাহলে এই পদ্ধতি আপনার জন্য কোন কাজেই লাগবেনা কারন এই
উন্নয়নশীল বা মধ্যবিত্ত দেশের জনগন কিন্তু অনলাইনে পন্য বা সেবা সাধারনত
ক্রয় করেনা তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরুর পূর্বে মার্কেট নিয়ে গবেষণা করাটা
জরুরী। আগামীতে এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে
। তবে প্রাথমিকভাবে বিশ্বের জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট মার্কেটিং করার
প্রতিষ্ঠানের নাম জানিয়ে রাখি- এমাজন, সিজে, ইবে ইত্যাদি
বই লিখে আয়ঃ
ইবুক থেকে আয় করা একটি খুবই জনপ্রিয় পদ্ধতি । আপনি যদি ভালো লেখক হন তবে
সহজেই ইবুক লিখে আয় করতে পারেন । ইবুক থেকে আয় একটি চলমান প্রক্রিয়া ।
আপনার বইটি যত বিক্রয় হবে আপনি তত বেশি মুনাফা পাবেন । যদি আপনি এই
পদ্ধতিতে সফল হতে পারেন তবে একটি বই আপনাকে আজীবন মুনাফা দিয়ে যাবে ।
আমি ইবুক সম্পর্কে বেশ কিছু নিবন্ধ প্রকাশ করেছি নিম্নের লিংকগুলোতে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছেঃ-
সেবা বিক্রয় করে আয় করুনঃ
আপনি আপনার ব্লগ থেকে আপনার সেবা বিক্রয় করে আয় করুন যেমন আপনি একজন ওয়েব
ডিজাইনার, ফটোশপ এক্সপার্ট, ইত্যাদি সম্পর্কে নিজের দক্ষতাকে উপস্থাপন করুন
এর মাধ্যমে সহজেই আপনার নতুন নতুন কাজের অফার পেতে পারেন বিভিন্ন জায়গা
থেকে ।
ডোনেশন বাটন যুক্ত করে আয়ঃ
আপনি আপনার ব্লগে ডোনেশন বাটন যুক্ত করতে পারেন । আপনার ব্লগের পাঠক আপনার
ব্লগ থেকে ভালমানের তথ্য পেয়ে যদি সন্তুষ্ট হয় এবং তাদের সামনে থাকা ডোনেশন
বাটনটির মাধ্যমে সহজেই আপনাকে কিছু ডোনেশন করতে পারে । এধরনের একটি
জনপ্রিয় সাইটের নাম উল্লেখ করছি যার নাম “উইকিপিডীয়া” প্রতি বছরের
নির্দিষ্ট একটি সময়ে উইকিপিডীয়াতে ডোনেশন বাটন প্রধান পাতায় যুক্ত করা হয়
এর মাধ্যমে তারা বছরের সম্পূর্ণ খরচ উত্তোলন করে থাকে ।
ব্লগে মেম্বারশিপ একাউন্ট ব্যবহার করেঃ
আপনি চাইলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিয়ে আপনার ব্লগে মেম্বারশিপ
অপশন চালু করতে পারেন এবং প্রতি সদস্যের জন্য আপনি মাসিক নির্দিষ্ট অর্থ
কেটে নিতে পারেন এর মাধ্যমে আপনি বেশ ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন
।
পরিশেষে, আপনি কি একজন সফল ব্লগার হতে চান ? একজন সফল ব্লগার হবার জন্য আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে একজন সফল ব্লগারের কিধরনের গুনাবলি থাকা উচিত তা সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন