
ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় করার অনেক উপায় থাকলেও, অনেকেই শুরুতে গুগল
এডসেন্সকেই বেশি পছন্দ করেন। আয় করার ক্ষেত্রে এটা বেশ প্রচলিত কৌশল হলেও,নতুন ব্লগারদের আয় করার
জন্য কৌশলটি তেমন উৎসাহ ব্যাঞ্জক নয়।
কারণ গুগল এডসেন্স এর ক্ষেত্রে কোন একটা ওয়েব সাইট থেকে কি পরিমাণ আয় হবে তা নির্ভর করে আর পি এম (revenue
per thousand impressions of an ad) এর উপর। তাই
সাইটে ভিজিটর সংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণ না হলে গুগল এডসেন্স থেকে ভাল আয় করা সম্ভব নয়। উদাহরণ স্বরূপ RPM যদি $4 হয়, তাহলে প্রতি $100 এর জন্য প্রয়োজন হবে ২৫,০০০ এড ইমপ্রেশন। আর স্বভাবিক ভাবেই একটা নতুন সাইট থেকে বেশি ভিজিটর এবং বেশি আয় প্রায় অসম্ভব।
আপনি কি ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় করার জন্য ভাল কোন কৌশল খুঁজছেন? তাহলে আপনি ইচ্ছা করলেই
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর বিশাল সাম্রাজ্যে প্রবেশ
করতে পারেন। যা আপনার জন্য বেশ লাভ জনক হতে পারে। বিষয়টি তেমন জটিল কিছু নয়। চিন্তা করুন আমার বিক্রি করার জন্য কিছু পণ্য সামগ্রী আছে, আপনি আপনার ব্লগের মাধ্যমে আমার বেশ কিছু পণ্য বিক্রয় করতে সাহায্য করলেন। ফলাফল হিসেবে আমি আপনাকে আমার
মুনাফার একটা অংশ দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানালাম।
আমাজান অ্যাসোসিয়েটস এফিলিয়েট প্রোগ্রামও ঠিক একইভাবে কাজ করে। সাধারণত এক্ষেত্রে আমাজান সাধারণ পণ্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে পণ্য মূল্যের 4%-8.5% প্রদান করে থাকে। তবে ডিজিটাল প্রোডাক্টস ( যে সকল পণ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডাউনলোড করা সম্ভব, যেমন বই, ম্যাগাজিন, মিউজিক ভিডিও, ভিডিও টিউটোরিয়াল
ইত্যাদি।) এর ক্ষেত্রে এই হার ২৫% এমনকি তার বেশিও হতে পারে।
আমাজান অ্যাসোসিয়েটস সবচেয়ে পুরাতন, এবং বর্তমানের সবচেয়ে বড়
এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। তাদের রয়েছে প্রায় এক মিলিয়ানের উপর বিভিন্ন ধরণের পণ্য সামগ্রী। তাই আপনি খুব সহজেই আমাজান অ্যাসোসিয়েটস অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে
রেজিস্ট্রেশন করে আজই শুরু করতে পারেন এফিলিয়েট মার্কেটিং।
আপনি একবার সাইন আপ করে
প্রয়োজনীয় তথ্য ( যেমন আপনি কিভাবে আপনার ইনকামের অর্থ উত্তোলন করতে চান) দেয়ার পর কাজ শুরু করেন এবং আপনি যদি থ্রেসোল্ড লিমিট(যেমন ২ মাসের বিপতীতে $100) অতিক্রম করতে পারেন, তাহলে আপনার ইনকামের অর্থ আপনি পেয়ে যাবেন। পরবর্তীতে ২মাস
অতিবাহিত হওয়ার পর, আপনি যদি আরো বেশি করে পণ্য বিক্রয়ে সহায়তা করতে পারেন
তাহলে আপনি আমাজান থেকে মাসিক পে-চেক পেতে থাকবেন।
অন্যন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে আপনাকে সাইন আপ করতে এবং একাউন্ট এপ্রুভ করতেই বেশ ঝামেলায় পড়তে হবে অথবা আপনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু শর্তে সম্মতি
প্রদান করতে হবে। এ সকল দিক থেকে বিবেচনা করলে আমাজান অ্যাসোসিয়েটস বেশ সহজবোধ্য এবং নির্ভলযোগ্য।
আমাজান কুকির বিশেষ সুবিধা
আমাজান কুকি ২৪ ঘন্টার জন্য সক্রিয় থাকে। মনে করুন আপনার ব্লগ এর মাধ্যমে আমাজানের কিছু বই প্রোমোট করলেন। একজন ভিজিটর কোন একটা বই এর মাধ্যমে রিডাইরেক্ট
হয়ে amazon.com এ প্রবেশ করলেন। এখন পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে উনি যদি এক বা একাধিক পণ্য ক্রয় করেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন। এক্ষেত্রে আপনি যে পণ্যটি
প্রোমোট করেছেন সেটাই যে বিক্রি হতে হবে এমনটি নয়, বরং ২৪ ঘন্টা টাইম
ফ্রেমের মধ্যে amazon.com থেকে আপনার
রেফারেন্সে যে কোন পণ্য বিক্রয় হলেই আপনি উপযুক্ত পরিমাণ কমিশন পাবেন।
amazon.com এর রয়েছে প্রায় মিলিয়ানের উপর বিভিন্ন ধরণের পণ্য সামগ্রী, যেগুলো গুণে ও মানে বিশ্বসেরা। তবে
আপনার, যে সকল ধরণের পণ্যই পছন্দ হবে এমনটা নয়। আপনি আপনার ব্লগের মাধ্যমে সেই সকল পণ্য
সামগ্রী সম্পর্কে আপনার ভিজিটরদের উৎসাহিত করুন, যা আপনার কাছেও
প্রয়োজনীয় এবং মানসম্মত বলে মনে হয়। আপনার ব্লগের বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কযুক্ত আন্তর্জাতিক লেখকদের বিভিন্ন ধরণের বই, জনপ্রিয় মাসিক ম্যাগাজিন, বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিডিও লার্নিং, জনপ্রিয় শিল্পীদের গানের ডিভিডি ইত্যাদির রেফারেন্স আপনার পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন ব্লগ আর্টিকেলের মধ্যেই আর্টিকেলের
একটা অংশ হিসেবে যুক্ত করুন। এতে ভিজিটরা এড দেখে বিরক্তি প্রকাশ করবে না বরং পণ্যটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবে।
জনসাধারণ আমাজানকে বিশ্বাস করে
amazon.com সবচেয়ে পুরাতন এবং বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় ই-কমার্স সাইট। তাই ইতোমধ্যেই জনপ্রিয়তা পাওয়ার সাথে সাথে জনসাধারণের আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জন
করতে সমর্থ হয়েছে। আপনার ভিজিটরদের অনেকেরই আমাজানে একাউন্ট আছে এবং তাদের ক্রেডিট কার্ডের ইনফরমেশন দ্রুত চেক আউট করার জন্য সংরক্ষিত আছে । আর
অন্যরাও অন্তত আমাজানের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করার
ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততা বা অনিশ্চয়তা নিয়ে চিন্তা করবে না।
আমাজান ভিজিটরদের ক্রেতায় রুপান্তরিত
করার ক্ষেত্রে বিশ্বসেরা
আমাজান প্রতিবছর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করছে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য। এবং গ্রাহক এবং ক্রেতা সাধারণের পছন্দ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ
এবং সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সব সময়ই গবেষণা চলছে। আর এজন্যই এত বছর ধরে আমাজান সফল। আপনিও আমাজানের মাধ্যমে সফল হবেন যদি সততা, ধৈর্য্য আর পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনার ভিজিটরদের আমাজানের ক্রেতায় পরিণত করে তাদের বিক্রিতে ভূমিকা রাখতে পারেন। আপনি যতবেশি সংখ্যক ভিজিটরকে ক্রেতায় রূপ দিতে
পারবেন আপনার প্রাপ্ত কমিশনের হারও বৃদ্ধি পাবে।
প্রাপ্ত কমিশনের হার বৃদ্ধির সুযোগ
আমাজান অ্যাসোসিয়েটস এফিলিয়েট
প্রোগ্রামে আংশ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই যে বিষটি একটু খারাপ চোখে দেখেন তা হল প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাপ্ত কমিশনের পরিমাণ খুব কম থাকে। শুরুতে 4% কমিশন পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি যদি মেধা এবং সামন্য কিছু শ্রম দিয়ে আপনার ভিজিটরদের ক্রেতায়
পরিণত করতে পারেন তাহলে কমিশনের হার বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
পাশের তালিকা থেকে দেখা যায়। এক মাসে আপনি মাত্র ৭টি বা তার অধিক পণ্য বিক্রয়ে সহায়তা করতে পারলেই, আপনার প্রাপ্ত কমিশনের পরিমাণ
হবে 6% । আর আপনি খুব সহজেই এ পর্যায়ে পৌছাতে সমর্থ হবেন। আর আপনি যদি আপনার ব্লগটিকে বেশ
জনপ্রিয় করে তুলতে পারেন এবং আপনার পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের ভাল সংখ্যক ভিজিটর তৈরি হয়ে যায়, তাহলে একমাসে ৬৩১+ পণ্য
বিক্রয় করাও খুব একটা কঠিন কাজ হবে না, যখন আপনি 8% কমিশন পাবেন। তাই শতকরা
হারটিকে চিন্তা না করে পণ্য বিক্রয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির দিকে নজর দিলে দ্রুত সফল হওয়া যাবে।
……………………………………………………………………
আজ এখানেই শেষ করছি। আপনাদের কাছেও আমাজান এ্যাসোসিয়েটস এফিলিয়েট প্রোগ্রাম সম্পর্কিত কোন বিশেষ অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে মন্তব্য প্রদানের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন